সেদিন কী হয়েছিল বন্ধ দরজার পেছনে ? চৈতন্য অন্তর্ধান রহস্য | অফটপিক | আমার বাংলা নেট সেট

Поділитися
Вставка
  • Опубліковано 16 вер 2024
  • বন্ধ দরজার পিছনে সেদিন কী ঘটেছিল -
    কথায় বলে কলমের জোর নাকি তলোয়ারের থেকেও বেশি! বাংল সাহিত্যেও এর প্রমাণ আছে। ছদ্মনামের আশ্রয়ে হোক বা স্বনামে, সামাজিক সমস্যা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা - লেখার মধ্য দিয়ে গর্জে উঠেছে প্রতিবাদের স্বর। আবার সেই প্রতিবাদকে দমনও করা হয়েছে নির্মমতার সাথে। বিষয়টি যদি সমসাময়িক না হয়ে, হয় কয়েকশো বছর পুরনো - তবু নিস্তার মেলেনা। মধ্যযুগের এক রহস্য ফাঁস করতে চাওয়ার অপরাধে মরতে হয় বিংশ শতকের গবেষককে। কি সেই রহস্য ? কেনই বা গবেষকের মৃত্যু হল? আমার বাংলার অফটপিকের আজকের পর্বে থাকছে তারই আলোচনা।
    মধ্যযুগের ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা শ্রী চৈতন্যদেব। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে হরিনামের মন্ত্রদানে জয় করেছিলেন ভক্তহৃদয়। নিষ্কাম ভক্তির আদর্শ প্রচার করেন বঙ্গে, উৎকলে। তাঁর জীবনলীলার শেষ পর্ব কাটে নীলাচলে। মাত্র ৪৮ বছর বয়সে মহাপ্রভুর তিরোধান ঘটে। জনশ্রুতি অনেক - কেউ বলেন রথযাত্রায় সপারিষদ নৃত্য করতে করতে পায়ে ইঁট বিদ্ধ হয়ে তিনি সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত হন, কেউ বলেন কৃষ্ণনাম করতে করতে তিনি পুরীর সমুদ্রগর্ভে প্রবেশ করেন, আবার কারোর মতে পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ দেবের মূর্তির সাথে তিনি লীন হয়ে যান।
    চৈতন্য জীবনীকার শ্রী কৃষ্ণদাস কবিরাজ এবিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি, বৃন্দাবন দাসও নীরব থেকেছেন। পাশপাশি আরো একটি তথ্য উঠে আসে তা হল মন্দিরের পান্ডারা খুন করেছিলেন চৈতন্যদেবকে।
    বাংলা এবং ওড়িয়া ভাষায় রচিত বেশ কিছু বইয়ের উল্লেখ থেকে জানা যায় ১৫৩৩ সালের ২৯শে জুন, শ্রী চৈতন্যদেব গান করতে করতে গুন্ডিচা মন্দিরে প্রবেশ করেন। দুপুর ৩টে থেকে মন্দিরের দরজা বন্ধ ছিল। রাত ৮টার সময় মন্দিরের দরজা খুলে পান্ডারা জানান তাঁর অলৌকিক তিরোধানের কথা। এমনকি মন্দিরর ভিতরে থাকা স্বরূপ দামোদরের খোঁজও মেলেনা আর। উধাও হয়ে যায় তাঁর লেখা পুঁথিটিও। মন্দির প্রাঙ্গণে সমাধিস্থ করা হয় মহাপ্রভু ও স্বরূপ দামোদরকে।
    অবতারকল্প মহাপ্রভুর লৌকিক দেহাবসানের কথা মেনে নেয়নি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ। ভক্তদের কাছেও তাঁর জগন্নাথ বিগ্রহে লীন হওয়ার মিথ একরকম বিশ্বাসে পরিণত। মহাপ্রভুর খুনের কথা মানতে নারাজ তাঁর ভক্তসমাজ।
    তবে কেন ১৯৯৪ সালে খুন হন গবেষক ডঃ জয়দেব মুখোপাধ্যায়?
    কেন ২০০০ সালে পুরীর মন্দিরের সংস্কারের সময় মন্দিরের প্রাচীর থেকে পাওয়া যায় একটি সাড়ে ছয় ফুট এবং তার থেকে একটু ছোট দুটো নরকঙ্কাল ?
    এবং কেন‌ই বা কঙ্কাল দুটো উধাও করে দিতে হয় Archeological Survey of India র ল্যাবরেটরি থেকে?
    কোনো সদুত্তর মেলেনা কারোর কাছ থেকে।
    ডঃ জয়দেব মুখোপাধ্যায় তার দীর্ঘ গবেষণায় প্রথম প্রকাশ করেন ‘কাঁহা গেলে তোমা পাই’ বইটি। বহু দুষ্প্রাপ্য তথ‍্য তিনি সংগ্রহ করেছিলেন,
    এই পর্বে চৈতন্যদেবের হত্যার আভাস দিয়ে পরবর্তী পর্বে তাঁর হত্যাকারীদের পরিচয় প্রকাশে বদ্ধপরিকর ছিলেন মহাপ্রভু গবেষক জয়দেব মুখোপাধ‍্যায়।
    এমনকি চৈতন্যদেবকে সমাধিস্থ করার জায়গার হদিসও ছিল তার কাছে।
    কিন্তু তাঁকে খুন করা হয়। বিনা চিকিৎসায় মারা যান তার আহত মা। এমনকি তার গবেষণার যাবতীয় বইপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। হত্যা নয় আত্ম-হত্যা বলেই কিনারা হয়ে যায় এই কেসের।
    অথচ প্রশ্ন থেকে যায়।
    হাত দুটো যার পিছমোড়া করে বাঁধা, মাথা চৌবাচ্চায় আর পা দুটো চৌবাচ্চার বাইরে, লন্ডভন্ড সমস্ত ঘর, ওলোট-পালোট বইখাতা-পত্র, আর উধাও দ্বিতীয় পর্বের সেই পান্ডুলিপি - এমন অভাবনীয় আত্ম-হননের কারণ কী হতে পারে?
    Archeological Survey of India র ল্যাবরেটরি থেকেই বা কোন মন্ত্রবলে গায়েব হয়ে যায় কঙ্কাল দুটো? কোন প্রভাবশালীর তৎপরতায় এই কঙ্কাল অন্তর্ধান? কেন এই বিষয়ে আর কোনো তথ্য মেলনা? প্রশ্নই সার। মহাপ্রভুর কী পরিণতি হয়েছিল আজ তা জানার উপায় নেই, তবে তথ্য বলে তাঁর জনপ্রিয়তা পান্ডাদের ঈর্ষ্বান্বিত করে তুলেছিল, উৎকলের রাজা নাকি রাজকার্য ছেড়ে মহাপ্রভুর বড় ভক্ত উঠছিলেন, ওড়িয়াদের বাঙালি বিদ্বেষও এর কারণ বলে মনে করেন কেউ, আবার কেউ এও বলেন তিনি মুসলিমদের চর হয়ে উৎকলে এসেছিলেন।
    বাতাসে ভাসে অনেক কথা, তবু সাধারণ ভাবে মনে হয় তাঁর সাম্যবাদী জীবনদর্শন মেনে নিতে পারেননি অনেক রক্ষনশীল সম্প্রদায়। তাই হয়তো সরিয়ে দিতে হয়েছিল মহাপ্রভুকে !
    বা লীন হয়ে যেতে হয়েছিল জগন্নাথের বিগ্রহের সাথে।
    এক‌ইভাবে হারিয়ে যেতে হয়েছিল জয়দেব মুখোপাধ‍্যায়কে।
    সব‌ই বন্ধ দরজার পিছনের গল্প। আর আজ‌ও তাই রহস‍্যে মোড়া প্রশ্ন আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায় -
    কী হয়েছিল বন্ধ দরজার পিছনে ?
    #amarbanglanetset

КОМЕНТАРІ •