||তখন অপরাজিতা

Поділитися
Вставка
  • Опубліковано 8 вер 2024
  • ||তখন অপরাজিতা #১ম পর্ব || বাবার অফিসে একটা আন্টি ছিল, রিতু আন্টি, বাবা তার সাথেই থাকেন।|| #Love kahini
    #সানজানা আলম
    আজ শনিবার। হিসেব মতো অয়নির আজ বাবার সাথে দেখা করার কথা। কিন্তু আজ অয়নির যেতে ইচ্ছে করছে না একদম।ইদানিং মাঝে মাঝেই এমন হয়। যখন যা করার কথা তখন সেটা করতে ইচ্ছে করে না।অকারণে মন খারাপ হয়। মনে হয় দরজা বন্ধ করে চিৎকার করে কাঁদে। অয়নির ভালো নাম অপরাজিতা।নামটা মা রেখেছেন। অয়নি ঘুম থেকে উঠে বিছানায় হেলান দিয়ে বসল। ঘড়িতে আটটা বাজে। মা এতক্ষণে অফিসে চলে গিয়েছেন। আপুমণি অয়নির সাথেই ঘুমান। কিন্তু তিনি অনেক ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন। ফজরের নামাজ পরে কোরআন তিলাওয়াত করেন।তারপর কিছু সময় ছাদে হাঁটেন।নাজমা ব্রেকফাস্ট দিয়ে দেয় টেবিলে সোয়া সাতটার মধ্যে। সে ব্রেকফাস্টও একটা বিরক্তিকর জিনিস, রুটি আর ভাজি, সাথে ডিম পোচ। ডিম পোচের মত এমন ল্যাতল্যাতে জিনিস অয়নির খেতে খুব বাজে লাগে, তাও জোর করে খেতে হবে।
    মা বের হয়ে যান পোণে আটটায়, অফিসের গাড়ি তাকে পিক করতে আসে। অয়নির স্কুল ডে শিফটে, বারোটা থেকে শুরু হয়।আজ অবশ্য ছুটি।
    অয়নির বাবা ঢাকায়ই থাকেন তবে তিনি আলাদা থাকেন।
    কোর্টের নির্দেশমতো প্রতি শনিবারে অয়নির সাথে দেখা করেন।তবে ইদানীং বাবা ভীষণ ব্যস্ত। দুয়েক ঘন্টার জন্য আসেন, এসেই তাড়াহুড়ো শুরু করেন। অয়নি বাবাকে বলেছে, আসতে হবে না প্রতি সপ্তাহে।
    অয়নির বাবা মা আলাদাভাবে ভীষণ ব্যস্ত।তাই তাদের একসাথে থাকা হয়ে ওঠেনি।অয়নি যখন ক্লাশ ফাইভে পড়ে, তখন একদিন মা বললেন, এখন থেকে মা আর অয়নি আপুমনির সাথে থাকবেন। অবশ্য তখনো যে বাবা রোজ বাসায় আসতেন, তেমন নয়। অয়নি শুনেছে আড়ালে, বাবার অফিসে একটা আন্টি ছিল, রিতু আন্টি, বাবা তার সাথেই থাকেন।অয়নি ক্লাশ টেনে পড়ে এখন। পাঁচ বছর আগে যা বুঝতে পারত না, এখন সেটা ভালো করেই বোঝে।বাবা রিতু আন্টিকে বিয়ে করেছেন।
    আজ বিকেলে হাসিব ভাইয়া পড়াতে আসতে চেয়েছেন। তিনি সাধারণত বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার পড়াতে আসেন।গতকাল তার একটা রিইউনিয়ন ছিল। তাই আসতে পারেননি।
    হাসিব ভাইয়ার কাছে পড়তে অয়নির খুব ভাল লাগে।
    ভাইয়া দারুণ হ্যান্ডসাম। তবে ভাইয়া খুব একটা কথা বলেন না পড়াতে এসে। দেড়ঘন্টা থাকেন, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি পড়ান সপ্তাহে দুদিন। হাসিব ভাইয়া 'প্রয়াস' কোচিং এর টিচার।গতবার অয়নির ফিজিক্স কেমিস্ট্রিতে মার্ক একটু কম আসায় মা হাসিব ভাইয়াকে অনুরোধ করে বাসায় নিয়ে এসেছেন পড়াতে। নয়তো উনি বাসায় এসে প্রাইভেট টিউশনি করেন না। ভারী গম্ভীর মানুষ।
    অয়নির ইদানীং কী যে হয়েছে, হাসিব ভাইয়ার মোটা ফ্রেমের চশমাটাও ভীষণ ভালো লাগছে। অন্য সব পড়া বাদ দিয়ে হলেও ফিজিক্স কেমিস্ট্রি রেগুলার পড়ছে, যদিও ভাইয়া "গুড" এর বেশি কিছু বলছেন না!
    অয়নি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল।
    রোদ ঝলমল করছে, পাশের বাসার ছাদে কাজের মেয়েটা জামা কাপড় নেড়ে দিয়েছে।একটা সবুজ রঙের ওড়না পতপত করে উড়ছে পতাকার মত।অয়নির নামতে ইচ্ছে করছে না বিছানা থেকে।আপুমণি এসে কয়েকবার ডেকেছেন। ব্রেকফাস্ট করে তৈরি হতে হবে। নয়টায় কোচিং, সেখানেই বাবা আসবেন। তারপর তাড়াতাড়ি করে বাসায় ফিরতে হবে।
    প্রতিদিন কোচিং থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সাথে স্কুলে চলে যায় অয়নি।
    আপুমণি আবারো ডাকছেন। অয়নি বিছানা থেকে নেমে ঝটপট হাতমুখ ধুয়ে নিয়ে নিলো। ডাইনিংয়ে গিয়ে ওর মনটা ভালো হয়ে গেল।আজ আপুমণি খিচুড়ি রেধেছেন ছোলার ডাল দিয়ে।এটা ভীষণ ভালো হয় খেতে। তবে রোজ রোজ এটা রান্না হয় না বাসায়।
    নানাভাই মারা যাওয়ার পরে আপুমনিও একটু নরম হয়ে গেছেন। এই পৃথিবীতে আপুমণিই অয়নিকে একটু বোঝেন।অয়নি খেতে বসল।
    আপুমনি জলপাই এর আচার দিয়ে দিলেন প্লেটের পাশে।
    মা কী বের হয়ে গেছে? আপুমনিকে জিজ্ঞেস করল অয়নি।
    -মা বের হয় পোণে আটটায়, এখন বাজে পোণে নয়টা, বলে আপুমনি হাসলেন।তবে হাসলেও তিনি মনে মনে কষ্ট পেলেন।বাচ্চাটা মা কে পায় না একদম। সেপারেশন এর পর মনি কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে গেছে। তিনি মাঝে মাঝে ভাবেন, তিনি না থাকলে অয়নের
    কী হবে!

КОМЕНТАРІ • 1