“সুরা আল- বাকারাহ(গাভী)" আয়াত ৩০ *بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم* পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। وَ اِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلٰٓئِكَۃِ اِنِّیۡ جَاعِلٌ فِی الۡاَرۡضِ خَلِیۡفَۃً ؕ قَالُوۡۤا اَتَجۡعَلُ فِیۡهَا مَنۡ یُّفۡسِدُ فِیۡهَا وَ یَسۡفِكُ الدِّمَآءَ ۚ وَ نَحۡنُ نُسَبِّحُ بِحَمۡدِكَ وَ نُقَدِّسُ لَكَ ؕ قَالَ اِنِّیۡۤ اَعۡلَمُ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۰﴾ অর্থ- আর (স্মরণ কর) যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদেরকে বললেন, ‘আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি।’ তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকেও সৃষ্টি করবেন যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে? অথচ আমরাই তো আপনার সপ্রশংসা মহিমা কীর্তন ও পবিত্রতা ঘোষণা করি।’ তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই আমি যা জানি তা তোমরা জান না।’ 🌹 *তাফসীর* 🌹 ফিরিশতা জ্যোতি থেকে সৃষ্ট আল্লাহর এক সৃষ্টি; যাঁদের বাসস্থান আসমান। যাঁরা আল্লাহর নির্দেশ পালনে এবং তাঁর প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনায় ব্যস্ত থাকেন। তাঁরা তাঁর কোন নির্দেশের অবাধ্যাচরণ করেন না। খলীফা এর অর্থ এমন জাতি যারা একে অপরের পরে আসবে। পক্ষান্তরে মানুষ দুনিয়াতে আল্লাহর খলীফা ও প্রতিনিধি এ কথা বলা ভুল। ফিরিশতাদের এমন বলা হিংসা ও অভিযোগমূলক ছিল না, বরং সত্য ও যৌক্তিকতা জানার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে, হে আমাদের প্রতিপালক! এই সম্প্রদায় সৃষ্টি করার যৌক্তিকতা কি? অথচ এদের মধ্যে এমন লোকও হবে যারা ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি এবং খুনাখুনি করবে? যদি উদ্দেশ্য এই হয় যে, তোমার ইবাদত হোক, তাহলে এই কাজের জন্য তো আমরা রয়েছি। আর আমাদের নিকট থেকে সে বিপদের আশঙ্কাও নেই, যা নতুন সৃষ্টি থেকে হতে পারে। আল্লাহ তাআলা বললেন, আমি জানি তাদের কল্যাণের দিক যেহেতু তোমাদের উল্লিখিত ফাসাদের দিক থেকেও বেশী তাই তাদেরকে সৃষ্টি করছি। আর এ কথা তোমরা জানো না। কেননা, এদের মধ্যে আম্বিয়া, শহীদ, সৎশীল এবং বড় ইবাদতকারী মানুষও হবেন। (ইবনে কাসীর) আদম-সন্তানের ব্যাপারে ফিরিশতাগণ কিভাবে জানলেন যে তারা ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টি করবে? এই অনুমান তাঁরা মানুষ সৃষ্টির পূর্বে যে (জ্বিন) সম্প্রদায় ছিল তাদের কার্যকলাপ দ্বারা অথবা অন্য কোন ভাবে করে থাকবেন। কেউ কেউ বলেছেন, আল্লাহ তাআলাই বলে দিয়েছিলেন যে, তারা এ রকম এ রকম কাজও করবে। তাঁরা বলেন, বাক্যে কিছু শব্দ উহ্য আছে, আসল বাক্য হল, আমি পৃথিবীতে এমন প্রতিনিধি বানাবো যে এ রকম এ রকম করবে। (ফাতহুল ক্বাদীর) 🌻শিক্ষা🌻 সৃষ্টি-জগতে মানুষের মর্যাদা এত উপরে যে মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি বা মানুষকে তার প্রতিনিধি বানাবার বিষয়টি ফেরেশতাদের কাছে উত্থাপন করেছেন। প্রতিনিধি নিয়োগের পুরো দায়িত্ব মহান আল্লাহর অন্য কারো নয়। শাসক বা ঐশী প্রতিনিধিকে ন্যায় বিচারক হতে হবে। ফাসেক বা কলুষিত ব্যক্তি এ মর্যাদার উপযুক্ত নয়। আর এ জন্যই ফেরেশতারা বলেছিল, রক্তপাত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মানুষ কি করে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হতে পারে? কিছু লোকের অনিষ্টতা ও বিভ্রান্তির কারণে, অন্যদের বিকাশ লাভের পথ রুদ্ধ করে দেয়া ঠিক নয়। মহান আল্লাহ এটা ভালো করেই জানতেন যে, এক শ্রেণীর মানুষ ভুল পথে চলবে, কিন্তু তারপরও তিনি মানুষকে তার প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করেননি। কোন কিছু সম্পর্কে জানার জন্য প্রশ্ন করতে দোষ নেই। ফেরেশতারা আল্লাহর কাজের প্রতিবাদ জানাবার জন্য প্রশ্ন করেননি বরং নিজেদের ধারণা আরো স্পষ্ট করার জন্যই প্রশ্ন করেছিলেন।
“সুরা আল- বাকারাহ(গাভী)" আয়াত ৩০
*بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم*
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
وَ اِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلٰٓئِكَۃِ اِنِّیۡ جَاعِلٌ فِی الۡاَرۡضِ خَلِیۡفَۃً ؕ قَالُوۡۤا اَتَجۡعَلُ فِیۡهَا مَنۡ یُّفۡسِدُ فِیۡهَا وَ یَسۡفِكُ الدِّمَآءَ ۚ وَ نَحۡنُ نُسَبِّحُ بِحَمۡدِكَ وَ نُقَدِّسُ لَكَ ؕ قَالَ اِنِّیۡۤ اَعۡلَمُ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۰﴾
অর্থ- আর (স্মরণ কর) যখন তোমার প্রতিপালক ফিরিশতাদেরকে বললেন, ‘আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি।’ তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকেও সৃষ্টি করবেন যে অশান্তি ঘটাবে ও রক্তপাত করবে? অথচ আমরাই তো আপনার সপ্রশংসা মহিমা কীর্তন ও পবিত্রতা ঘোষণা করি।’ তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই আমি যা জানি তা তোমরা জান না।’
🌹 *তাফসীর* 🌹
ফিরিশতা জ্যোতি থেকে সৃষ্ট আল্লাহর এক সৃষ্টি; যাঁদের বাসস্থান আসমান। যাঁরা আল্লাহর নির্দেশ পালনে এবং তাঁর প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনায় ব্যস্ত থাকেন। তাঁরা তাঁর কোন নির্দেশের অবাধ্যাচরণ করেন না।
খলীফা এর অর্থ এমন জাতি যারা একে অপরের পরে আসবে। পক্ষান্তরে মানুষ দুনিয়াতে আল্লাহর খলীফা ও প্রতিনিধি এ কথা বলা ভুল।
ফিরিশতাদের এমন বলা হিংসা ও অভিযোগমূলক ছিল না, বরং সত্য ও যৌক্তিকতা জানার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে, হে আমাদের প্রতিপালক! এই সম্প্রদায় সৃষ্টি করার যৌক্তিকতা কি? অথচ এদের মধ্যে এমন লোকও হবে যারা ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি এবং খুনাখুনি করবে? যদি উদ্দেশ্য এই হয় যে, তোমার ইবাদত হোক, তাহলে এই কাজের জন্য তো আমরা রয়েছি। আর আমাদের নিকট থেকে সে বিপদের আশঙ্কাও নেই, যা নতুন সৃষ্টি থেকে হতে পারে। আল্লাহ তাআলা বললেন, আমি জানি তাদের কল্যাণের দিক যেহেতু তোমাদের উল্লিখিত ফাসাদের দিক থেকেও বেশী তাই তাদেরকে সৃষ্টি করছি। আর এ কথা তোমরা জানো না। কেননা, এদের মধ্যে আম্বিয়া, শহীদ, সৎশীল এবং বড় ইবাদতকারী মানুষও হবেন। (ইবনে কাসীর)
আদম-সন্তানের ব্যাপারে ফিরিশতাগণ কিভাবে জানলেন যে তারা ফিতনা ও ফাসাদ সৃষ্টি করবে? এই অনুমান তাঁরা মানুষ সৃষ্টির পূর্বে যে (জ্বিন) সম্প্রদায় ছিল তাদের কার্যকলাপ দ্বারা অথবা অন্য কোন ভাবে করে থাকবেন। কেউ কেউ বলেছেন, আল্লাহ তাআলাই বলে দিয়েছিলেন যে, তারা এ রকম এ রকম কাজও করবে। তাঁরা বলেন, বাক্যে কিছু শব্দ উহ্য আছে, আসল বাক্য হল, আমি পৃথিবীতে এমন প্রতিনিধি বানাবো যে এ রকম এ রকম করবে। (ফাতহুল ক্বাদীর)
🌻শিক্ষা🌻
সৃষ্টি-জগতে মানুষের মর্যাদা এত উপরে যে মহান আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি বা মানুষকে তার প্রতিনিধি বানাবার বিষয়টি ফেরেশতাদের কাছে উত্থাপন করেছেন।
প্রতিনিধি নিয়োগের পুরো দায়িত্ব মহান আল্লাহর অন্য কারো নয়।
শাসক বা ঐশী প্রতিনিধিকে ন্যায় বিচারক হতে হবে। ফাসেক বা কলুষিত ব্যক্তি এ মর্যাদার উপযুক্ত নয়। আর এ জন্যই ফেরেশতারা বলেছিল, রক্তপাত ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মানুষ কি করে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হতে পারে?
কিছু লোকের অনিষ্টতা ও বিভ্রান্তির কারণে, অন্যদের বিকাশ লাভের পথ রুদ্ধ করে দেয়া ঠিক নয়। মহান আল্লাহ এটা ভালো করেই জানতেন যে, এক শ্রেণীর মানুষ ভুল পথে চলবে, কিন্তু তারপরও তিনি মানুষকে তার প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করেননি।
কোন কিছু সম্পর্কে জানার জন্য প্রশ্ন করতে দোষ নেই। ফেরেশতারা আল্লাহর কাজের প্রতিবাদ জানাবার জন্য প্রশ্ন করেননি বরং নিজেদের ধারণা আরো স্পষ্ট করার জন্যই প্রশ্ন করেছিলেন।