‘অমিয়-বাণী' ধারাবাহিক পাঠ।।পর্ব-০১।।রিপন দাশ।।AmiyoBani ll Serial Recitation ll Ep-01 ll Ripon Das

Поділитися
Вставка
  • Опубліковано 11 вер 2024
  • অৰ্দ্ধশতাব্দী পূর্ব্বে ‘অমিয়বাণী'র সঙ্কলয়িতা কুষ্টিয়ার অশ্বিনীকুমার বিশ্বাস- মহাশয় পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের মহৎ সান্নিধ্যলাভে ধন্য হন- সে বাংলা ১৩২২ সালের কথা। শ্রীশ্রীঠাকুর তখন সাতাশ বছরের যুবা, তাঁর অনুপম দেহকান্তিতে রূপের সাগর ঢেউ খেলে যাচ্ছে, প্রাণ-প্রাচুর্য্যে সারাক্ষণ ঝলমল করছেন। তখন সব অসম্ভব-সম্ভব-আজগবী সব কাণ্ড ঘটছে; সে সব অপূর্ব্বদিনের কথা আজ বিস্মৃতির অন্তরালে। শ্রীশ্রীঠাকুরের দিব্যতনু ঘিরে তখন কত-শত ভক্ত দিনের পর দিন তাথৈ তালে নাচছে, প্রাণোন্মাদী কীৰ্ত্তনের মহারোল আর জয়ঢাকের গুম-গুম্ শব্দে তাঁর চতুষ্পার্শ্বের জনতা জাগছে, ঝাঁকে-ঝাঁকে মানুষ ছুটে এসে কীৰ্ত্তনের প্রচণ্ড ঘূর্ণাবর্ত্তে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, পাবনা- কুষ্টিয়া - পদ্মার এপার-ওপার দিয়ে প্রাণের একটা উত্তাল স্রোত বয়ে যাচ্ছে। কীর্ত্তনের প্রমোদ-অঙ্গনে অদ্ভুত অলৌকিক সব ঘটনা ঘটছে, উদ্দণ্ড কীৰ্ত্তনে ভাবস্থ অবস্থায় কতজন ভক্তের দেহ-মনে প্রেমের অষ্টসাত্ত্বিকী-মহাবিকার ফুটে উঠছে। মানুষ তরে হয়ে উঠছে। ভক্তপরিমণ্ডল-সহ তিনি স্থান পরিক্রমা করছেন-গ্রামে-গ্রামে, নগরে-সহরে, - প্লাবনের বেগে; আর আপনার স্বভাবগত হাস্যে-লাস্যে, সন্দীপনী সেবা ও সাহচর্য্যে, মধুর ব্যবহার ও অমিয়ঢালা আলাপনে আপামর সকলকে সঞ্জীবিত করে তুলছেন। এক- একজন পতিত-পতিতার পুনর্জীবনলাভের কাহিনী কী অদ্ভুত চমকপ্রদ- যেন রাজপুরীর ঘুমন্ত রাজকন্যা সোনার কাঠির স্পর্শমাত্রই জেগে উঠছে। আবার, দূর-দূরান্তরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর মহাভাবসমাধির কথা। সে-অবস্থায় তাঁর জীবদেহে জৈবধৰ্ম্ম নিঃশেষে স্তব্ধ হ'য়ে যায়, অসাড় হিম-শীতল দেহে জীবনের কিছুমাত্র সাড়া ও সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায় না, স্থূলদেহ ও জড়জগতের সর্ব্ব- বন্ধনবিনির্মুক্ত হয়ে তিনি চৈতন্য-সত্তায় বিরাজ করতে থাকেন। ডাক্তার, বৈদ্য, বৈজ্ঞানিক, সংশয়বাদী ও নাস্তিকগণ শত-শত বার নানাভাবে পরীক্ষা ক’রেও এ-প্রহেলিকা পারাবার উত্তীর্ণ হতে না পেরে বিস্ময়ে হতবাক্ হ'য়ে থাকেন। যখন-তখন তিনি জীবন-মরণের সীমারেখা অতিক্রম ক'রে আধুনিক বিজ্ঞানেরঅমিয় বাণী
    ধারণাতীত অবস্থায় চ'লে যাচ্ছেন। পণ্ডিত মহলে মহা সোরগোল পড়ে গেছে। মৃত্যুর রাজ্যে অধিষ্ঠিত অবস্থাতেই আবার তাঁর অপূর্ব সুন্দর বদনামগুলে দেখা দেয় বিচিত্র রঙ-এর খেলা কখনো হাস্যোজ্জ্বল, কখনো নীল বিবর্ণ, কখনো অনির্বচনীয় কোন স্বৰ্গীয় দীপ্তিতে উদ্ভাসিত, অপূর্ব্ব ভাব-ব্যঞ্জনা নিয়ে ধীর উদাত্তস্বরে তাঁর শ্রীমুখ থেকে নির্গত হতে থাকে অশরীরী বাণী-সমূহ। এই মহা-ভাববাণী বা শ্ৰুতি-সমূহ শ্রোতৃমণ্ডলীর মনের গভীরতম প্রদেশ আলোড়িত ক'রে তাদের অন্তরে এক মোহনজ্বালা সৃষ্টি করে। পরাবারূপী পরব্রহ্মাই সৃজন-প্রগতিতে সৃজনবিধির ভেতর দিয়ে রূপ-রস-স্পর্শ-গান-গন্ধে ভরা অনন্ত-বৈচিত্র্য-সমাকীর্ণ সৃষ্টির প্রত্যেক যা-কিছুতে উদ্ভিন্ন হ'য়ে রূপ হাতে রূপে, গুণ হাতে গুণে, অবস্থা হ'তে অবস্থান্তরে বিবর্তিত হ'তে হ'তে চলেছে, আর আদি বাক্ সৃষ্ট যা-কিছু সবের পরম জনয়িতারূপে স্বমহিমায় অধিষ্ঠিত আছেন। এই আমি বাক্‌ই প্রথম সম্ভা, তিনিই বিশ্ব-আমি, তিনিই সচ্চিদানন্দময় ঈশ্বর। শ্রীশ্রীঠাকুর মহাভাবস্থ অবস্থায় পরমের সঙ্গে একীভূত হ'য়ে পরমের ইচ্ছা ব্যক্ত করছেন, পরাবারূপী পরব্রহ্ম জীব-করুণায় বিগলিত চিত্ত হ'য়ে সকলের সর্ব্ববিধ কল্যাণে সেদিন পরম পবিত্র নর-বিগ্রহ আশ্রয় ক'রে যুগধর্ম্ম বিঘোষিত করছেন। পরমকারণ হ'তে রক্ত-মাংস-সঙ্কুল জীবদেহে নেমে এসে পরমকারণের শুধু স্মৃতিমাত্র অবলম্বন করেই নয়, সে-বোধে সহজভাবে সদা প্রতিষ্ঠিত থেকে জনগণ যাতে অন্তরের স্বাধীন ইচ্ছায় তাদের সত্তানুস্যূত আদিম অনুরাগে সচ্চিদানন্দের মূর্তপ্রতীক জীবন্ত আদর্শকে জড়িয়ে ধরে তাঁরই অনুশাসনে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে করতে মঙ্গলপথের পথিকৃৎ হয়ে সপারিপার্শ্বিক সম্বৃদ্ধিতে, সর্ব্বপ্রকারে উচ্ছল হ'য়ে ওঠে-তার জন্য দুর্নিবার বেগে তাঁর কর্ম-সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়া, প্রয়োজনে ভক্তের বিশ্বাস গভীরতর করার উদ্দেশ্যে আপনার স্বরূপগত যোগেশ্বর্য্য ও বিভৃতি অজচ্ছলধারায় প্রকাশ করা, বাস্তব বিজ্ঞানের সুতীব্র আলোকপাতে শাস্ত্র ও দর্শনের কুজ্‌ঝটিকাজাল সরিয়ে দিয়ে সাৰ্ব্বজনীন মূল সত্যকে জগতে প্রকাশ ক'রে তারই উপর ব্যক্তি ও সমষ্টি-জীবন গ'ড়ে তুলতে হীন পারিপার্শ্বিকের কুটিল আক্রমণ ও ভীষণ- ভীষণ বাধা অতিক্রম ক'রে জনকল্যাণমূলক কৰ্ম্ম প্রতিষ্ঠান-সমূহের কী অপূর্ব্ব দক্ষতায় গোড়া পত্তন করা, সেদিনের অনেক কিছুই ছিল অদ্ভুত, অলৌকিক, ইতিহাসের পাতায় যার সাক্ষ্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নিকে-দিকে জনরব রটেঅभিবাণী
    গেছিল, পাবনায় বিশ্বগুরুর আবির্ভাব হয়েছে, কতজন তখন কত ভাব নিয়ে তাঁর দুয়ারে এসে হানা দিত, পরম দরদীর কাছে তাদের পুঞ্জীভূত বেদনার কাহিনী ঢেলে ঢেলে দিত, কতজন আবার আসত মনে দুৰ্ব্বহ প্রশ্নের বোঝা নিয়ে-চলার পথের সন্ধান খুঁজে পেতে। মনে প্রশ্নের পাহাড় নিয়ে অর্ধশতাব্দী পূর্ব্বে কোন একদিন কুষ্টিয়ার বিশ্বগুরুর পদপ্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন এই গ্রন্থের সঙ্কলয়িতাও।

КОМЕНТАРІ • 7