ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে মার্কিন প্রতিনিধি বৈঠকের পরই কেনো লু আবার দিল্লীতে | Dr Yunus | Donald Lu

Поділитися
Вставка
  • Опубліковано 19 вер 2024
  • অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বারের মতো ঢাকা সফর করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। এ সফর বাংলাদেশের পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে নতুন দরজা খুলবে বলেই প্রত্যাশা করেছিলেন পররাষ্ট্র বিশ্লষকরা। ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সরকারের যে যে বৈঠক করেছে তার আউট কাম আমার কাছে ভালোই মনে হয়েছে। কোন তা এক এক করে তুলে ধরছি।
    ১. রবিবার সকালে তারা বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে। নোবেল বিজয়ী এই ব্যক্তি যে সুন্দর ভাবে সব কিছু উপস্থাপন করতে পারেন এবং সুবক্তা তা তো সর্বজন স্বীকৃত। তিনি দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন। দর্শক আপনারা জানেন, একটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এ সরকার গঠিত হয়েছে। বাইরের পৃথিবীর লোকজন কিন্তু বুঝতে পারছে না এটা কী করে হলো। ফলে বাস্তব অবস্থাটা আসলে কী ছিলো তা বোঝানো জরুরী ছিলো আর তাই করেছেন ড. ইউনুস। তিনি ছাত্রদের নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লব সম্পর্কে বলেছেন, এই বিপ্লব বাংলাদেশে নতুন আশাজাগানিয়া যুগের সূচনা করেছে তা উল্লেখ করেছেন। বিপ্লব সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে তিনি বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় আঁকা বিভিন্ন গ্রাফিতি নিয়ে একটি আর্টবুক উপহার দিয়েছেন। সেই আর্টবুকে আর্ট বইটিতে ঢাকা এবং অন্যান্য শহর ও শহরের দেয়ালে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় আঁকা কিছু সেরা শিল্পকর্মের ছবি রয়েছে। গ্রাফিতিগুলোর ঐতিহাসিক তাৎপর্য সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসব গ্রাফিতিতে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসন এবং তাঁর নৃশংস বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী ছাত্র ও তরুণদের আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে। ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের ঢাকার দেয়ালের দিকে তাকানোর অনুরোধ করব। এই গ্রাফিতিগুলো এখনো আছে। শুধু বিপ্লবের পরেই আঁকা হয়নি। জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় ছাত্ররা গ্রাফিতি আঁকার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। শেখ হাসিনার শাসন ও তাঁর লেলুয়া বাহিনীকে অস্বীকার করেছে।
    ২. তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরে ৬টি সংস্কার কমিশনের কথা তুলে ধরেছেন। ভোট চুরিরোধ, গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ও দুর্নীতি রোধে এই কমিশনগুলো কিভাবে তা তুলে ধরেছেন। সেসময় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারলে ওয়াশিংটন আনন্দিত হবে বলে উল্লেখ করেন এবং জানান, এ ক্ষেত্রে তাঁরা প্রযুক্তি ও আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী।
    ৩. দর্শক, এই মুহুর্তে আমরা একটা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছি। এটা থেকে উত্তরণে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সমর্থন প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র বলতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি। এদের কাছে আমরা ৫ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি, সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেটা আমাদের খাদে পড়া অর্থনীতিকে তুলে আনতে সহায়তা করবে। এই সফরের সময়েই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার চুক্তি সই করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টে বা ইউএসএআইডি এ চুক্তি সই করেছে। স্বাস্থ্য, সুশাসন, মানবিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি ও মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই অর্থ কাজে লাগানো হবে।
    ৪. দর্শক, গত ১৫ বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। সেই অর্থ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব গুরত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করতে পারে এবং এটা আমাদের জন্য এই মুহূর্তে খুব জরুরি। অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতির উৎসব হয়েছে সেগুলোকে প্রতিরোধ বা প্রতিকার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু অনেকদিন ধরে বলে আসছে। এবার বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাদেরকে সরাসরি বলেছেন যে, ‘আমরা তোমাদের সহযোগিতা চাই’। পররাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, ‘বড় আকারে আর্থিক খাতে সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং পাচারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে বিশেষায়িত জ্ঞানকে ব্যবহার করা হবে, তবে এর চূড়ান্ত রূপ পেতে কিছুটা সময় লাগবে।’
    ৫. যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই প্রতিনিধি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ছিলেন, যাকে আমরা অনেকেই চিনি, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বা ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে তিনি বাংলাদেশ সফর করেছেন, তখনকার তার আলোচনারও বিষয়ও নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে। এছাড়া গত ৪ মাসের মাথায় এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় দফায় ঢাকা সফর। এই ডোনাল্ড লু ঢাকায় আসার আগে দিল্লি গিয়েছেন। এ নিয়ে বিশেষ কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে পালিয়ে বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দিল্লিতে ভারতের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠেছে। ইন্ডিপেন্ডন্ট টিভির অনলাইন ভার্সন জানিয়েছে বাংলাদেশে দুই দিনের সফর শেষে ঢাকা থেকে আবার দিল্লি গেলেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। রোববার বিকেলে দিল্লির উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। কুটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন খেলা এখানেই হবে।

КОМЕНТАРІ • 30