ঐতিহাসিক দরবার স্তম্ভ - সাতক্ষীরার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদশর্ন পর্ব-১১
Вставка
- Опубліковано 23 січ 2025
- দরবার স্তম্ভ সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা সদরের খুলনা পাইকগাছা সড়কের পাশে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন।
বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে নির্মিত এই স্তম্ভটি ভারতীয় উপমহাদেশে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে মাথা উঁচু করে।
পুরোপুরি ইটের তৈরি গোল স্তম্ভটির মাথার ওপর একটি বড় কলস, তার ওপর আরেকটি ছোট কলসের চিহ্ন দেখা যায়।
প্রাচীন এ স্তম্ভটির নিচের দিকে ২ দশমিক ৮ মিটার বেড়, ক্রমশঃ সরু হয়ে উপরের দিকে উঠেছে ৩ দশমিক ৭ মিটার উচ্চতায়।
ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশ যখন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ঠিক সে সময় ১৯০৫ সালে ব্রিটিশরা বাংলাকে ভেঙ্গে দেয়ার চক্রান্ত করে, যা বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। ১৯১১ সাল পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে বাংলার বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করা হয়। আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর এই ঘোষণার আনুষ্ঠানিক বাস্তবায়নের জন্য সম্রাট পঞ্চম জর্জ দিল্লিতে বৈঠকে বসেন। সম্রাটের এই আগমন উপলক্ষ্যে ও ঐতিহাসিক এই বিজয় উদযাপণ করতে তালা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের তীরে তৎকালীন তালার রাজনৈতিক প্রাণপুরুষ রাজকুমার বসু তালার মধ্যমণিতে এই ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক বিজয় স্তম্ভটি নির্মাণ করেছিলেন। শতাব্দীকালব্যাপী স্তম্ভটি আজও দাঁড়িয়ে আছে। সেই আন্দোলনের সাক্ষী ‘দরবার স্তম্ভ’ মাথা উঁচিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে তার অতীত ইতিহাস।
দরবার স্তম্ভটি এক সময় ঢেকে পড়েছিল অবৈধ স্থাপনায়। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় বেরিয়ে আসে স্তম্ভের মাথা। এরপর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। তবে দরবার স্তম্ভের সেই লাল ইটের চিহ্ন আজ অনেকটাই বিলীনের পথে। এছাড়া স্তম্ভের আশপাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকান-পাট।
আজও দরবার স্তম্ভটি দেখতে আসেন দূর-দূরান্তের মানুষ। আবার অনেকে কোনো কাজে তালায় গিয়ে স্তম্ভটি দেখে ও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব শুনে হতবাক হন।
বন্ধুরা আপনারা যদি উপমহাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে শতাব্দীকাল মাথা উচু করে দাড়িয়ে থাকা দরবার স্তম্ভটি ভ্রমন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে সাতক্ষীরা -খুলনা মহাসড়কের ১৮ মাইল বাজারে আসতে হবে সেখান থেকে পাইকগাছাগামী বাসে চড়ে তালা উপজেলা সদরের খেয়াঘাট মোড়ে নামলে রাস্তার ডান পাশে দেখতে পাবেন বঙ্গভঙ্গের ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী দরাবার স্তম্ভ।